
স্টাফ রিপোর্টারঃ ফুলবাড়িয়ায় সাবস্টেশন (বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র) না থাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও লো ভোল্টেজ সমস্যা দীর্ঘ দিনের। বিদ্যুৎের এ সমস্যায় গ্রাহক পর্যায়ে প্রায়ই দেখা দেয় ভোগান্তি। সমস্যায় নাজুক হওয়ার বদলতে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে সংবাদের শিরোনাম হয়। লো ভোল্টেজে অতিষ্ঠ ফুলবাড়িয়ার জনজীবন সংক্রান্ত সংবাদ ব্যাপক ভাবে প্রচারিত হওয়ায় সমস্যাটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। উদ্ভূত সমস্যার সমাধানে ২০২১ সালে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড পৌর এলাকার চকরাধাকানাই (লাহেড়ি পাড়া) মৌজায় বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্প ময়মনসিংহ জোন প্রকল্পের আওতায় ৩৩/১১কেভি নতুন বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র নির্মাণের নিমিত্বে ১ একর স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ করেন। যা অধিগ্রহণ শেষে একই বছরের ৩১ মার্চ ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নিকট হস্তান্তর করে দেন। সে প্রেক্ষিতেই অধিগ্রহণকৃত জমি ২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সরকার চুড়ান্ত ভাবে গেজেট আকারে প্রকাশ করেন।
জানা গেছে, গেজেট প্রকাশের পরেই বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এ প্রকল্পের কাজ শুরু করেন। স্থাপনা নির্মাণের উপযোগী করে তুলতে প্রথমে ৫ ফুট উচ্চতায় মাটি ভরাটের কাজ করে এবং বিল্ডিং নির্মাণের জন্য ৪০টি পাইলিং এর কাজ সম্পন্ন করে। একই সাথে ময়মনসিংহের আকুয়া ৩৩/১১সাব স্টেশন হইতে ফুলবাড়িয়া সাব স্টেশন পর্যন্ত ১১কেভি সোর্স লাইনের মাধ্যমে দীর্ঘ ৩০ কিলোমিটার লাইন টানানোর কাজ যা ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে।
সুত্র বলছে, ঠিকাদারের সময়ক্ষেপনে দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ থাকা ও দেশের পরবর্তী রাজনৈতিক পট পরিবর্তন পরিবর্তিত পরিস্থিতির সুযোগে গত ৩ ডিসেম্বর সরকারের অনুকূলে অধিগ্রহণকৃত রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন গেজেট ভুক্ত সম্পত্তিতে নির্মাণ কাজ করতে গেলে শ্রমিক দল নেতা মোঃ সেলিম মিয়া ও সদ্য বাতিল হওয়া পৌর কাউন্সিলর শরিফুল ইসলাম শ্রমিকদের কাজে বাঁধা প্রদান করেন। প্রকল্পের কাজ করতে আসা শ্রমিকরা এ ঘটনা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলে প্রকল্পের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ হাসনান জামান খান ও সহকারি প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সরকারি কাজে বাঁধা না দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে ঘটনা স্থল ত্যাগ করেন।
সরজমিনে উপজেলার লাহেড়ি পাড়া অধিগ্রহণকৃত স্থানে গিয়ে দেখা গেছে মাটি ভরাট ও পাইলিং শেষ করার পর প্রকল্পের কাজটি পুরোদমে বন্ধ রয়েছে। কাজ করতে নিষেধ করায় শ্রমিকরা চলে গেছে। এই মুহূর্তে উন্নয়ন মূলক কাজটি সম্পন্ন করা না হলে সেচ,ক্ষুদ্র শিল্প,অফিস আদালত থেকে শুরু করে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান লো ভোল্টেজ এর জন্য চরম দুর্ভোগে পড়বে বলে জানান বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের ফুলবাড়িয়া কার্যালয়ের আবাসিক প্রকৌশলী প্রশান্ত কুমার ধর।
স্থানীয়রা জানান, একটি সাবস্টেশন না থাকায় ফুলবাড়িয়ার প্রায় আমাদের ১৭ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎ বিভ্রাট এবং লো ভোল্টেজ সমস্যায় ভোগছেন। লো ভল্টেজের কারণে মটর দিয়ে পানিও ওঠেনা। অনেক সময় বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম নষ্ট হয়ে যায়। জনসাধারণের কথা চিন্তা করে সরকারের নিকট এই উন্নয়ন কাজটি দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ করার দাবি জানান তারা।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ওই শ্রমিকদল নেতা সেলিম মিয়া বলেন, আমরা সরকারের নিকট জমি বিক্রি করিনি, কোন অর্থও নেইনি। আমাদের জমি আমাদের থাকবে। সাবেক এমপি এটি করেছেন। আমাদের ৩ সন্তান প্রতিবন্ধি, তাদের জন্য আমাদের ওই জমিটুকু খুবই প্রয়োজন।
প্রকল্পের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ হাসনান জামান খান জানান, অধিগ্রহণকৃত স্থানে নির্বিঘেœ শঙ্কামুক্ত হয়ে কাজ করার সহযোগীতা চেয়ে আমাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি প্রশাসনকে লিখিতভাবে অবহিত করেছেন।
এ ব্যাপারে ফুলবাড়িয়া থানার ওসি মোহাম্মদ রুকনুজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, সরকারি কাজে কেউ বাঁধা দিতে পারবে না। সরকারি কাজে সহযোগিতা করতে অফিসারকে বলে দিয়েছি।